বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তি বিন সালমান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিশ্বে সবচেয়ে কম বয়সী প্রতিরক্ষামন্ত্রী। দায়িত্ব পেয়েই অবশ্য নিজের দেশকে এক নৃশংস যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলেছেন। ইয়েমেনের সাথে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই আরেক আঞ্চলিক পরাশক্তি ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়েছে সৌদি আরব। আর এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে আপাত দৃষ্টিতে বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধারী নেতা হয়ে উঠেছেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
ছোট বেলা থেকেই পিতৃভক্ত মোহাম্মদ বিন সালমান। দেশ আর পারিবারিক সম্পদ রক্ষার যোগ্য উত্তরসূরী ভাবা হয় তাকে। অন্য ভাইয়েরা যখন উচ্চশিক্ষা জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পড়তে গেছে, তখন সালমান থেকে গেছেন দেশেই। পড়াশোনার জন্য বেছে নিয়েছেন রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়কে। এখান থেকেই আইনে স্নাতক শেষ করেন তিনি। সালমান একজন আন্তরিক যুবক হিসেবেই পরিচিত। কখনোই ধুমপান ও নেশা করেন না। পার্টির প্রতিও তার কোনো আগ্রহ নেই।
কিন্তু সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও ডেপুটি যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমানকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যক্তি’ বলে মন্তব্য করেছে ব্রিটেনের দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট। তাকে ক্ষমতা-প্রিয়, আগ্রাসী ও উচ্চাভিলাষী বলেও অভিহিত করেছে দৈনিকটি।
বিল ল’-এর লেখা এক নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, বিন সালমান ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যে পাশবিক যুদ্ধ শুরু করেছেন তা শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তিনি ক্ষমতা-প্রেমিক। সৌদি রাজতান্ত্রিক সরকার এখন তার আঞ্চলিক শত্রু ইরানের বিরুদ্ধে মধ্যযুগীয় নাইট বা উচ্চাভিলাষী যুদ্ধবাজদের মতই বিপজ্জনক তৎপরতা চালাচ্ছে। আর এ কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে এমন এক ব্যক্তি যে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হওয়ার জন্য দৃশ্যত খুব তাড়াহুড়া করছেন।
বিল আরও বলেন, রাজা হওয়ার পর কয়েক মাসের মধ্যেই বিন সালমানের ক্ষমতা নাটকীয়ভাবে বাড়ানো হয়। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পাশাপাশি জাতীয় জ্বালানী কোম্পানি আর্মাকো’র প্রধান হন প্রিন্স বিন সালমান। এছাড়াও হন শক্তিশালী নতুন সংস্থা অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন বিষয়ক পরিষদের প্রধান এবং এরই সুবাদে পান সব মন্ত্রণালয়ের ওপর নজরদারির ক্ষমতা। সৌদির জন-বিনিয়োগ তহবিলেরও দায়িত্ব পান বিন সালমান।
বিল জানান, সৌদি রাজ-পরিবারের অনেকেই দাম্ভিক বিন সালমানের আচরণে ক্ষুব্ধ। তারা রাজা সালমান ও মুহাম্মাদ বিন নায়েফকে ক্ষমতাচ্যুত করারও আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু এইসব আহ্বানে কোনো কাজ হয়নি। এখন প্রশ্ন হল, বিন সালমানের হঠকারী স্বভাব কি তাকে ইরানের সঙ্গে সংঘাতে নামাতে পারে? আর সেটা কখন ঘটবে সেটাই এখন দেখার বিষয়। সৌদি ডেপুটি যুবরাজ হয়ত দাদার মত নানা সামরিক অভিযানে সফল হওয়ার কথা ভাবছেন। হয়তো তিনি ইরানের ওপর বিমান হামলাও চালাতে পারেন।
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক পশ্চিমা অর্থনীতিবিদ জেসন টুভাই বলেন, ‘তিনি খুবই মেধাবী। অর্থনীতির জন্য তিনি অনেক ভালো কাজ করছেন। অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় অনেক পরিবর্তন এনেছেন; যা ধরে সামনে এগিয়ে যাওয়া উচিত।’
প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি